প্রকাশিত: Sat, Jun 8, 2024 1:09 PM
আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 10:54 PM

[১]দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের জেহাদের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে প্রস্তাবিত বাজেট: সিপিডি

বিশ্বজিৎ দত্ত: [২] বাজেটোত্তোর সংবাদ সম্মেলনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদের একটি বিষয় ছিল। কিন্তু ২০২৪-০৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার জন্য যে প্রস্তাব করা হয়েছে। তাতে আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। 

[৩] তিনি বলেন, কর খেলাপি, ঋণ খেলাপিদের বছরের পর বছর নানাভাবে করের আওতায় আনার জন্য সরকার এসব সুযোগ প্রদান করে। যা একজন সৎ করদাতাকে মর্মাহত করে। 

[৪]  মাত্র ১৫ শতাংশ কর দিবে কালো কারবারিরা। কিন্তু এটিও তারা দিতে চান না। এরা একটি সিন্ডিকেট তৈরী করেছে। এই সিন্ডিকেট ভেঙ্গে এগিয়ে আসার কোন দিক নির্দেশনা বজেটে নেই। এটি ভাঙ্গার জন্য এখন প্রয়োজন একটি সৎ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। 

[৫] সিপিডির পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এই বাজেটকে নতুন সরকারের নতুন বাজেট মনে হয়নি। নতুন অর্থমন্ত্রীর নতুন কিছু এই বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। এটি একটি দূর্ভাগ্যজনক অবস্থা। 

[৬] তিনি বলেন, আগামীতে খাদ্য বর্হির্ভূত পণ্যের দাম লাগাম ছাড়া হয়ে যাবে। যা সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমার বদলে উল্টো দিকে নিয়ে যাবে। জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি হবে গোদের উপর বিষ ফোঁড়া। 

[৭] ড. মোস্তাফিজ বলেন, বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যদি তা কমেও মূল্যস্থীতি আর কমবে না। কারণ যে জিনিসের দাম বাড়ে তা কমে না। আমাদের হিসাবে এখন দেশে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ ২০ শতাংশ। 

[৮] সার্বিক বাজেট আলোচনায় সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা বলেন, কার কাঠামোতে পরিবর্তন করে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তকে কিছুটা রিলিফ দেয়া হয়েছে। 

[৯]  কিন্তু রাজস্ব ঘাটতি পুরণে যে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে তাতে যে পরিমাণ  রাজস্ব আয় দেখানো হয়েছে তা আদায় সম্ভব হবে না।  সেখানে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি ২৭ শতাংশ করার প্রয়োজন হবে বলে তিনি মনে করেন। 

[১০] তিনি বলেন, ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ তলানিতে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিম্নমূখী, তার উপরে মূল্যস্ফীতির চাপ এরমধ্যেই বাজটে ভাল প্রবৃদ্ধির আশাবাদ দেখানো হচ্ছে। এটি গত ২ বছর ধরেই দেখানো হচ্ছে। আসলে  কিছুই হচ্ছে না। 

[১১] তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে নানা ধরনের মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের বলা হচ্ছে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। এখন জানা দরকার, সেগুলো থেকে আসলে আমরা কত উপকার পেয়েছি। না জোয়াল বহন করে চলছি।  শিল্পায়নের নামে নানা ধরনের অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করা হয়েছে।  এগুলো কোন সুফল দিচ্ছে কিনা তাও এখন জানা দরকার। 

[১২] তিনি এমপিদের শুল্ক যুক্ত গাড়ি আমদানির বিষয়ে বলেন, এমপিদের কিছু শুল্ক দিয়ে গাড়ি আমদানির বিষয়টির জন্য আইন পরিবর্তন করতে হবে। বাজেট অধিবেশনে এমপিরা যদি দেশের এই সংকট সময়ে নিজেদের এই সামান্য সুযোগ ছাড়ে তবে মনে করতে হবে তাদের সাধারণ মানুষের প্রতি দ্বায়িত্ব বোধ রয়েছে। না হলে এটাই মনে করা হবে তারা নিজেদের জন্যই পার্লামেন্টে গিয়েছেন।  

[১৩] ড. ফাহমিদা  বলেন, বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বরাদ্দ বৃদ্ধি পায়নি । শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতেও পর্যাপ্ত নেই। শুধুমাত্র মূদ্রানীতি দিয়ে  মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবেনা বলেও জানান। সম্পাদনা: ইকবাল খান